শ্যাম্পু করারও নিয়ম আছে। অনেকেই মনে করেন প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে স্ক্যাল্প শুষ্ক হয়ে যায়। চুল পড়ে। ধারণাটি ঠিক নয়।নিয়মিত শ্যাম্পু করলে স্ক্যাল্পে খুশকি বা ফাঙ্গাল ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি কমে। নিয়মিত শ্যাম্পু না করলে চুল পড়ার শঙ্কাও বেড়ে যায়। স্ক্যাল্পের অয়েল গ্র্যান্ড এমনিতে বেশি কার্যকর থাকে। গরম আবহাওয়ায় স্ক্যাল্প ঘেমে ময়লা জমে।
নিয়মিত শ্যাম্পু করলে তা কিছুটা মাইল্ড করে নিতে পারেন। একটি বোতলে আধা কাপ শ্যাম্পু, দুই টেবিল চামচ চিনি এবং সমপরিমাণ গোলাপজল ও গ্লিসারিন নিন। ভালোভাবে মিশিয়ে ১৫ দিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে নিয়মিত শ্যাম্পু ব্যবহারে চুলের ক্ষতি হবে না।
তবে চুলের ধরন বুঝে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত।
► সোজা চুল শ্যাম্পু করার কিছুক্ষণ পরই তেলতেলে হয়ে যায়। তাঁরা শ্যাম্পু করার সময় শ্যাম্পুর সঙ্গে খানিকটা লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। চুল লেপটে থাকবে না।
চুলে কিছুটা ঢেউ খেলানো ভাব চলে আসবে।
► কোঁকড়া চুলে শ্যাম্পু করার পর অনেকের চুলে শুষ্ক ও রুক্ষ ভাব দেখা যায়। তাঁরা চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত তিলের তেল দিয়ে হট স্টিম করে নিন। এরপর শ্যাম্পু করুন। কোঁকড়া চুলের রুক্ষ ও শুষ্ক ভাব কমে যাবে।
► ঢেউ খেলানো চুলে শ্যাম্পু করার ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় মাথায় রাখুন। চুল যেন বেশি রুক্ষ না হয়। শুষ্ক না হয় এবং বেশি ময়েশ্চারাইজড না হয়। এমন চুলে অবশ্যই সালফেট ও সিলিকন ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। শ্যাম্পু যেন মাইল্ড হয় সেদিকেও খেয়াল রাখুন।
► রঙিন চুলে শ্যাম্পু সাবধানে করা উচিত। একটু ভুলে চুলে সাধের রং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমন চুলে সব সময় সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। শ্যাম্পুতে কোনো অ্যালকোহল থাকা যাবে না। গরম পানি দিয়ে চুল ধোয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। চুলে হার্ড শ্যাম্পু দরকার হলে সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুদিন ব্যবহার করুন। স্ক্যাল্পের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু বেছে নিন।
► স্ক্যাল্পে সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া শ্যাম্পু ব্যবহার উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন কার্যকরী শ্যাম্পু। ছয় কাপ পানি ও দুই কাপ নিমপাতা ভালোভাবে জ্বাল করে সবুজ নির্যাস বের করে নিন। এর মধ্যে সারা রাত ভিজিয়ে রাখার রিঠার পানি মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি দিয়ে শ্যাম্পুর মতো করে চুল ধুয়ে ফেলুন। দুই সপ্তাহে স্ক্যাল্প থেকে ব্রণ, চুলকানি ও ফুসকুড়ির মতো সমস্যা দূর হবে।
► রুক্ষ ও শুষ্ক স্ক্যাল্পে মৃতকোষ ওঠে। অতিরিক্ত শুষ্কতায় চুলকানি হয়। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। প্যারাবন, ফরমালডিহাইড, সিলিকন, অ্যালকোহল ও সালফেটযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। স্ক্যাল্পে চুলকানি, ফুসকুড়ি থাকলে সপ্তাহে দুদিন মেডিকেটেড ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
► তৈলাক্ত স্ক্যাল্পে নিয়মিত শ্যাম্পু করা অত্যাবশ্যক। এই স্ক্যাল্পে ঘাম বেশি হয়। ময়লা, ধুলাবালি বেশি জমে চুল তেলতেলে করে দেয়। বোটানিক্যাল এক্সট্রাক্ট, ক্ল্যারিফায়িং এজেন্টস আছে এমন শ্য্যাম্পু এ ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর। বেশি ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহারে তৈলাক্ত স্ক্যাল্পের চুল লেপ্টে থাকে। এ ক্ষেত্রে ভলিউমাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।